মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ৩৮ বছর পরে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় পরিকাঠাময় বড় বদল আসতে চলেছে। প্রসঙ্গত, মেট্রো (Kolkata Metro) পরিষেবা শুরুই হয়েছিল ৩৮ বছর আগে। জানা গিয়েছে, প্রতি আড়াই মিনিটের ব্যবধানে ট্রেন চালাতে প্রায় চার দশক আগেকার ইস্পাতের থার্ড রেল বদলে এবার অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল বসতে চলেছে। জানা গিয়েছে, সিঙ্গাপুর, লন্ডন, মস্কো, ইস্তানবুল, বার্লিন শহরে যেমনভাবে মেট্রো (Kolkata Metro) চালানো হয়, সেই ধাঁচেই এবার চলবে কলকাতার মেট্রো। ওই সমস্ত দেশগুলিতে মেট্রো পরিষেবার শুরুর দিকে ইস্পাতের থার্ড রেল ব্যবহার করা হতো এবং তা পরবর্তীকালে বদলে ফেলা হয় অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেলে। এবার ঠিক এমনটাই হতে চলেছে কলকাতা মেট্রোতে। কিন্তু হঠাৎ ইস্পাতের পরিবর্তে অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার কেন? এর উত্তর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে ইস্পাতের তুলনায় অ্যালুমিনিয়াম উত্তম পরিবাহী এবং অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেলের বিদ্যুতের অপচয় ইস্পাতের তুলনা অনেক কম হবে। সাধারণভাবে ইস্পাতের রোধের পরিমাণ বেশি হওয়ায় যখন বিদ্যুৎ পরিবহন হয়, তখন তা অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিদ্যুৎ প্রবাহের ক্ষেত্রে রোধকে আরও বাড়িয়ে তোলে। শুধু তাই নয় থার্ড রেল অত্যন্ত উত্তপ্ত হলে তাতে আগুনের স্ফুলিঙ্গ পর্যন্ত সৃষ্টি হতে পারে এবং ট্রেনের বৈদ্যুতিক মোটরে তড়িৎ ঠিকঠাক পৌঁছতে পারেন। এর ফলে মেট্রো চলাচলে বাধার সৃষ্টি হয়। মূলত এই সমস্ত সমস্যাগুলির কথা মাথায় রেখেই কলকাতা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো, জোকা-তারাতলা, নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোতে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল ইতিমধ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।
কি বলছেন মেট্রো আধিকারিকরা
মেট্রো রেলের (Kolkata Metro) মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আগামী দু বছরের মধ্যে অ্যালুমিনিয়ামে থার্ড রেল বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। এবং প্রথম পর্যায়ে এই কাজ চলবে দমদম থেকে মহানায়ক উত্তম কুমার স্টেশন পর্যন্ত। আরও খবর মিলেছে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল বসানো হলে বিদ্যুতের অপচয় ৮৪ শতাংশ কমানো যাবে। হিসাব বলছে থার্ড রেল বসানো হলে যা খরচ হবে, সেই খরচ তিন বছরের বিদ্যুৎ সাশ্রয়তেই উঠে আসবে। এছাড়াও ইস্পাতের থার্ড রেল উত্তপ্ত হওয়ার হলে মেট্রো সুরঙ্গ যেভাবে গরম হয়ে যেত সেটাও বন্ধ হবে।
বর্তমানে উত্তর দক্ষিণ লাইন বা ব্লু লাইনের মেট্রো সবচেয়ে কম পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে চলাচল করে, ট্রেনের (Kolkata Metro) এই ব্যবধান আড়াই মিনিটে নিয়ে আসতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন সিগন্যাল ব্যবস্থা তেও পরিবর্তন করতে হবে এবং আধুনিক স্বয়ংক্রিয় কমিউনিকেশন বেস্ট ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম চালু করার জন্য থার্ড রেল বদল এর কাজ করা হচ্ছে। ওয়াকিবহুল মহল বলছে এই ব্যবস্থার ফলে মানুষ আরো দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোতে যাত্রী বৃদ্ধি ৪৩৬ শতাংশ
অন্যদিকে জানা গিয়েছে, যাত্রীদের মধ্যে ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো, যা গ্রীন লাইন নামে পরিচিত। বর্তমানে শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত এই মেট্রো (Kolkata Metro) চড়ে গন্তব্যে পৌঁছান শহর এবং শহরতলীর অসংখ্য মানুষ। চলতি বছরে, শিয়ালদহ মেট্রো চালু হওয়ায় এই লাইনে যাত্রীবৃদ্ধি হয়েছে প্রথম চার মাসে ৪৩৬ শতাংশ যা নয়া রেকর্ড। এই মেট্রোতে যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়তে চলেছে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের অনুমান। তার কারণ চলতি বছরের শেষেই হুগলি নদীর নিচ দিয়ে মেট্রো পরিষেবা শুরু হলে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর সঙ্গে তা জুড়ে যাবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours