Chandrayaan 3 Launch: উৎক্ষেপণ সফল, এবার যাত্রা শুরু! চাঁদের দেশে পাড়ি দিল ‘চন্দ্রযান ৩’

ISRO Chandrayaan 3: ইতিহাসের পথে এক পা বাড়ালো ভারত... 
chandrayaan-3-launch
chandrayaan-3-launch

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গন্তব্য চাঁদের দক্ষিণ মেরু অঞ্চল। নির্ধারিত সময়েই মহাকাশে পাড়ি দিলো ভারতের ‘চন্দ্রযান ৩’ (Chandrayaan 3 Launch)। ইতিহাসের পথে এক পা বাড়ালো ভারত। শুক্রবার, ঠিক ২টো ৩৫ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে সফল উৎক্ষেপণ হলো ‘এলভিএম-৩’ রকেটের। এই রেকেটে চেপেই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বাধা টপকে মহাকাশের একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছল চন্দ্রযান ৩ মহাকাশযান। সেখান থেকে আগামী একমাস বিভিন্ন পদক্ষেপ অবলম্বন করে চাঁদের উদ্দেশে ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটারের পথ পাড়ি দেওয়া শুরু করবে ‘চন্দ্রযান ৩’। উৎক্ষেপণের ৩০ মিনিট পর ইসরোর তরফে ঘোষণা করা হয়, এলভিএম-৩ রকেট সফলভাবে চন্দ্রযান ৩ মহাকাশযান নির্ধারিত কক্ষপথে পৌঁছে দিয়েছে। 

কোন পদ্ধতিতে চাঁদের দিকে এগোবে চন্দ্রযান ৩?

উৎক্ষেপণের পর ২৬ মিনিটের মাথায় ‘চন্দ্রযান ৩’ মহাকাশযানকে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছে দেয় রকেট। সেখানে পেলোড অর্থাৎ ‘চন্দ্রযান ৩’ মডিউলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রথমে, ডিম্বাকৃতি কক্ষপথে পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করবে চন্দ্রযান মডিউল। লক্ষ্য গতি সঞ্চয় করা। এইভাবে আগামী কয়েকদিন ধরে ৫ বার কক্ষপথের আয়তন একদিকে স্থির রেথে অন্যদিকে বাড়াতে থাকবে ‘চন্দ্রযান ৩’। ডিম্বাকৃতি কক্ষপথ এমন ভাবে তৈরি হবে যা একদিকে ১৭০ কিলোমিটার (অ্যাপোজি বা পৃথিবী থেকে কাছে) অন্যদিকে ৩৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার (পেরিজি বা পৃথিবী থেকে দূরে)। এর পরের ধাপে, রেট্রো ইঞ্জিন ফায়ার করিয়ে পৃথিবীর কক্ষপথ ছেড়ে চাঁদের কক্ষপথ (লুনার ট্রান্সফার অরবিট) ধরবে ‘চন্দ্রযান ৩’। এর পর ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটারের পথ পাড়ি দেওয়া শুরু করে চাঁদের কক্ষপথে (লুনার অরবিট) প্রবেশ করবে মহাকাশযান। চূড়ান্ত ধাপে, চন্দ্রপৃষ্ঠের ১০০ কিমি ওপরে প্রোপালশন মডিউল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ল্যান্ডার মডিউল অবতরণ শুরু করবে। 

চন্দ্রযান মহাকাশযানের মোট ওজন ৩,৯০০ কেজি। এতে রয়েছে একটি ল্যান্ডার, একটি রোভার ও একটি প্রোপালশন মডিউল। রোভারটি রয়েছে ল্যান্ডারের পেটে। এই দুটো মিলিয়ে ল্যান্ডার মডিউল। প্রোপালশন মডিউলের কাজ ল্যান্ডার মডিউলকে বহন করা। প্রোপালশন মডিউলের ওজন ২,১৪৮ কেজি, ল্যান্ডারটি ১,৭২৩ কেজি ও রোভারের ওজন ২৬ কেজি। এবারের চন্দ্রযানে মোট ১৩টি ‘থ্রাস্টার’ রয়েছে, যা সফট ল্যান্ডিং করতে সাহায্য করবে। প্রোপালশন মডিউল যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। চন্দ্রযান ২-এর অন্তিম ব্যর্থতার কথা মাথায় রেখে চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডারে এবার কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে। ইসরো সূত্রে খবর, এই ল্যান্ডার চাঁদের মাটিতে ১২০ ডিগ্রি কোণে অবতরণ করবে। উলম্ব গতিবেগ থাকবে সেকেন্ডে ২ মিটারেরও কম। 

এক ঝলকে উৎক্ষেপণ-পরবর্তী প্রক্রিয়া-পর্ব 

২টো ৩৫ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ হলো ‘এলভিএম-৩’ রকেট। কাউন্টডাউন শেষ হতেই ‘ইগনিশন’। প্রথমে দুদিকে আটকানো জোড়া এস-২০০ স্ট্র্যাপ বুস্টার ইঞ্জিন ফায়ার করলো। মহাকাশের দিকে উঠল ‘এলভিএম-৩’। এই রকেট বহন করছে ‘চন্দ্রযান ৩’ মহাকাশযানকে।

উৎক্ষেপণের ১০৮ সেকেন্ড পর জ্বলে উঠলো এল-১১০ ইঞ্জিন, যা মূল রকেটের সঙ্গে যুক্ত। 

উৎক্ষেপণের ১২৭ সেকেন্ড পর দুধারে আটকে থাকা এক জোড়া স্ট্র্যাপ বুস্টার মূল রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হলো। 

উৎক্ষেপণের ১৯৫ সেকেন্ড পর পেলোড ফেয়ারিং বিচ্ছিন্ন হলো। 

উৎক্ষেপণের ৩০৬ সেকেন্ড পর এল-১১০ ইঞ্জিন বিচ্ছিন্ন হলো। 

আরও পড়ুন: ‘ব্যর্থতা-ভিত্তিক পদ্ধতি’-তেই সফল হবে চন্দ্রযান ৩! দাবি ইসরো প্রধানের, বিষয়টা কী?

উৎক্ষেপণের ৩০৮ সেকেন্ড পর সি-২৫ ইঞ্জিন জ্বলে উঠলো।

উৎক্ষেপণের ৯৫৪ সেকেন্ড পর সি-২৫ ইঞ্জিন বন্ধ হলো। 

উৎক্ষেপণের ৯৬৯ সেকেন্ড পর মূল রকেট থেকে ‘চন্দ্রযান ৩’ মডিউল বিচ্ছিন্ন হলো। 

উৎক্ষেপণের ২৬ মিনিট পর ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৭০ কিলোমিটার উচ্চতায় নির্ধারিত কক্ষপথে পৌঁছে গেলো ‘চন্দ্রযান ৩’।

এক মাস পর চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করবে ‘চন্দ্রযান ৩’। ইসরো জানিয়েছে, ২৩ বা ২৪ অগাস্ট, ‘চন্দ্রযান ৩’-এর সম্ভাব্য অবতরণ।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles