মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কাঁথি (Kanthi) ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে এবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন কাঁথির অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্রনেতা শুভদীপ গিরি। বুধবার তাঁকে মামলা করার অনুমতিও দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ।
মঙ্গলবারই এই মামলার তদন্তকারী পুলিশের কাছে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেননি কেন? তিনি কোথায় জানেন না?’’ বিচারপতির সেই কড়া প্রশ্নবাণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বুধবার সকালে তৃণমূল ছাত্রনেতার আইনজীবী হাইকোর্টে হাজির হন। বিচারপতি মান্থার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করার অনুমতি চান তিনি। আদালত সেই মামলার অনুমতি দেয়।
মঙ্গলবার কাঁথির (Kanthi) ধর্ষণ মামলাটি বিচারপতি মান্থার একক বেঞ্চে ওঠে। এদিন বিচারপতি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তদন্তকারী কাঁথি থানার মহিলা অফিসার রুমা মণ্ডলকে তাঁর নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। শুভদীপকেও এদিন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, হাইকোর্ট গ্রেফতারির নির্দেশ দিলেও, তিনি কেন নিম্ন আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন? বুধবার সেই আগাম জামিনের মামলারও শুনানি হওয়ার কথা নিম্ন আদালতে। তবে তার আগেই হাইকোর্টের গ্রেফতারির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানালেন শাসক দলের ছাত্রনেতা।
আরও পড়ুন: মোদিকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্রের জের, কংগ্রেস ছাড়লেন এ কে অ্যান্টনির ছেলে
কী ঘটেছে?
গত ১০ জানুয়ারি কাঁথি (Kanthi) থানায় শুভদীপ গিরির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ জানান নির্যাতিতার বাবা-মা। তার ঠিক ন’দিনের মধ্যেই কাঁথি পুলিশের তদন্তে ভরসা নেই জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। গত ১৯ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে মামলাটি দায়ের করা হয়। তারপরেও কেটে গিয়েছে পাঁচ দিন। আদালত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়ার পরেও পুলিশ শুভদীপকে গ্রেফতার না করায় মঙ্গলবার পুলিশের তদন্ত নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। মঙ্গলবার তদন্তকারী আধিকারিককে তিনি বলেন, ‘‘আপনি সঠিক ভাবে তদন্ত করছেন না... । যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে (শুভদীপকে) গ্রেফতার করুন।’’
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে শুভদীপ গিরির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তিনি এক যুবতীর সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেছিলেন। মোবাইলে একান্ত মুহূর্তের বেশ কিছু ছবিও তুলে রেখেছিলেন। কিন্তু পরে শুভদীপ বিয়ে করতে রাজি না হলে নির্যাতিতা তাঁকে সেই সব ছবি মুছে ফেলতে বলেন। গত ১৪ অক্টোবর সেই ছবি মোছার অজুহাতে প্রাক্তন বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে দিঘার একটি হোটেলে যান শুভদীপ। সেখানে সেই যুবতীকে ধর্ষণ করেন ওই তৃণমূল ছাত্রনেতা। এই ঘটনার পরে গত ১ নভেম্বর ওই নির্যাতিতা আত্মহত্যা করতে যান। নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে কাঁথির থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। এমনকি, আদালত তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিলেও তাও মানা হয়নি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours