মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কেলেঙ্কারির রথ যেন থামতেই চাইছে না। কখনও কয়লা, কখনও বালি আবার কখনও শিক্ষক নিয়োগ। একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ হচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। সেই কেলেঙ্কারি আর স্বজন পোষণের তালিকায় নয়া সংযোজন এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া! রাজ্যের আরেক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এবার অভিযোগ!
এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি
তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেনের মেয়ে সৌমিলি সেন এবার আরজিকর হাসপাতালে এমবিবিএস কোর্সে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন। অভিযোগ, এই ভর্তি কিন্তু স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হয়নি। ডাক্তারিতে পড়ার সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় সৌমিলির নাম ছিল ১৩০০০০ নম্বরে। অর্থাৎ, একেবারে তালিকার শেষের দিকে। সেখানে কীভাবে তিনি আরজিকর হাসপাতালে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, নিট পরীক্ষার মেধা তালিকায় প্রথম পঞ্চাশের মধ্যে নাম না থাকলে কখনওই আরজিকর হাসপাতালের মত রাজ্যের প্রথম সারির সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া যায় না। সেখানে কীভাবে নিট তালিকায় এত পিছনে নাম থাকলেও সৌমিলি আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হলেন?
একাংশের অভিযোগ, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শান্তনু সেন। তাছাড়া তিনি ওই এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা। তার 'পছন্দের' চিকিৎসকেরাই ওই হাসপাতালের প্রশাসনিক প্রধান পদে রয়েছেন। এর আগেও হাসপাতালের একাধিক সিদ্ধান্ত হয়েছে তাঁর অঙ্গুলি হেলনে। এমনকি আরজিকরের কয়েক জন পড়ুয়া তৃণমূলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায়, তাদের রেজিস্ট্রেশন না দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শান্তনু সেনের বিরুদ্ধে। তাই এমন প্রভাবশালী নেতা, তাঁর প্রভাব খাটিয়েই মেয়েকে ওই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেছেন বলে অভিযোগ করছেন চিকিৎসক মহলের একাংশ।
যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেন। তার যুক্তি, এগুলো সব মিথ্যা অভিযোগ। রাজনৈতিক ভাবে বিরোধী দল লড়াই করতে পারছে না। তাই ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে। বিশেষত, তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ করে বলেছেন, কোনও রাজনৈতিক মতাদর্শ নেই। লড়াই করার ক্ষমতা নেই। তাই তাঁর মেয়েকে টার্গেট করা হয়েছে।
তিনি জানান, তার মেয়ে সৌমিলি স্কুলে প্রতি বছর প্রথম হত। একবারেই পরীক্ষায় বসে ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেছেন। নিট পাশ না করলে কেউ ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান না বলে সাফাই শান্তনুর। তিনি বলেন, "দরকার হলে মেয়ের সব সার্টিফিকেট দেখাতে পারি। দয়া করে কুরুচিপূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না। রাজনৈতিক লড়াই, রাজনৈতিক ভাবে করতে শিখুন। "
শুধু মেয়ের ভর্তি নয়। প্রশ্ন উঠেছে শান্তনু সেনের দেওয়া বার্ষিক আয়ের হিসাব নিয়েও। বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন, শান্তনু সেন বলেছেন, তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ টাকা। এ নিয়ে শান্তনু সেনকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, তিনি নিয়মিত রেডিওলজিস্ট হিসাবে প্র্যাকটিস করেন। আর এটাই তাঁর রোজগার।
যদিও বিরোধীদের দাবি, পুরো দলটাই দুর্নীতি আর মিথ্যাচারে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। যেগুলো দেখা যাচ্ছে, তা হিমশৈলের চূড়া মাত্র।
+ There are no comments
Add yours