মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আমরা খাদ্য গ্রহণ করি। সেই খাদ্য আমাদের শক্তি দেয়। একথা আমরা সবাই জানি। এই অর্জিত শক্তি আমরা শারীরবৃত্তীয় ও দৈনন্দিন জীবনের নানান কাজে খরচ করি। এই সহজ হিসেবের উপর ভিত্তি করেই মানুষ বেঁচে থাকে। শক্তি গ্রহণ ও খরচের মধ্যে ভারসাম্য না থাকলেই ওজন বাড়ে বা কমে। ধরুন আপনি বেশি খাচ্ছেন, কিন্তু পরিশ্রম কম করছেন। তখন ওজন বাড়বে। অপরদিকে বেশি পরিশ্রম করে কম খেলে ওজন কমবে। এটাই সহজ হিসেব।
কিন্তু ধরুন কোনও ব্যক্তি আগেও যেমন খেতেন, এখনও তেমনই খান। শারীরিক পরিশ্রমও আগে যেমন করতেন, আজও তেমনই করেন। তবুও হু হু করে তাঁর ওজন কমছে বা বাড়ছে। এমন অবস্থা কিন্তু শারীরিক কোনও অসুস্থতার দিকেই ইঙ্গিত করে। এরকম ঘটলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
প্রাইমারি থাইরোটক্সিকোসিস—এই রোগে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে বেশি পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন বের হয়। শরীরে থাইরয়েড হরমোনের আধিক্য বিপাকক্রিয়াকে দ্রুত করে দেয়। বিপাকক্রিয়ার গতি বেড়ে যাওয়ার কারণে শরীরে শক্তি ক্ষয় অনেক বেশি হয়। ফলে ওজন কমে দ্রুত। এদিকে রোগীর খিদে ভালোই থাকে। আবার অন্যদিকে হাইপোথাইরোডিজম দ্রুত হারে ওজন বাড়ায়।
ডায়াবেটিস— পর্যাপ্ত খিদে থাকার পরও দ্রুত ওজন কমার অন্যতম কারণ হল ডায়াবেটিস। এই রোগে শরীর খাদ্যের মাধ্যমে গৃহীত গ্লুকোজ ব্যবহার করতে পারে না। গ্লুকোজ ইউরিন দিয়ে বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরে শক্তির ঘাটতি দেখা যায়। এছাড়া এই বিশেষ রোগে শরীরে উপস্থিত প্রোটিন ভেঙে পড়ে এবং দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। ফলে পেশির ক্ষয় হয় দ্রুত। আবার টাইপ টু ডায়াবেটিসের ফলে ওজন বেড়ে যায়।
ক্যান্সার— যে কোনও ধরনের ক্যান্সারই শরীরে শক্তির দ্রুত ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। ফলে ক্যান্সার হলে অনেক ক্ষেত্রেই ওজন কমে। তবে সমস্ত ধরনের ক্যান্সারের তুলনায় গ্যাস্ট্রো-ইন্টেসসটিনাল ক্যান্সার, অর্থাৎ পাকস্থলী, অন্ত্র, লিভার, খাদ্যনালীর মতো জায়গায় ক্যান্সার হলে ওজন দ্রুত কমে। কারণ খাদ্য হজমের প্রক্রিয়ায় শরীরের এই অংশগুলির ভূমিকা অনেক বেশি। তাই এই অংশে কর্কট রোগ ছড়িয়ে পড়লে খাবারকে পরিপাক করে শক্তি সঞ্চয় করতে সমস্যা হয়। আর পর্যাপ্ত শক্তির অভাবে ওজন কমে দ্রুত।
হতাশা— হতাশা বা মনের অসুখও মানুষের ওজন কমা বাড়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। হতাশা বা বিষ্ণণ্ণতা থেকে খাবারে অরুচি আসে. রাতে ঘুম কম হয়। এগুলি পরোক্ষে ওজন কমা-বাড়াতে প্রভাব ফেলে।
পলিসিস্টিক ওভারি— এর ফলে দেহে স্থূলতা বৃদ্ধি পায়।
দ্রুত ওজন বাড়া বা কমার উপসর্গকে কোনও সময়ই অগ্রাহ্য করবেন না। আবার ভয়ও পাবেন না। শুধু যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যত তাড়াতাড়ি ওজন কমা বা বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানবেন, ততই চিকিৎসা করতে সুবিধে হবে।
+ There are no comments
Add yours