মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাত্র ২০ দিনের মধ্যে পরপর মৃত্যু হয় একই পরিবারের ৫ জনের। মৃত্যুর ধরনও এক। প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়া। তারপর বিষক্রিয়ায় ধীরে ধীরে বিকল হতে থাকে শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। অবশেষে মৃত্যু। ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের গাড়ছিরোলিতে। চিকিৎসকেরাই প্রথম লক্ষ্য করেন, মৃতদের সকলেরই অসুস্থতার উপসর্গ এক ছিল। এরপরই সন্দেহ হয়, নিশ্চয়ই বিষক্রিয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে চারটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। শেষে দেখা গেল একের পর এক মৃত্যুর ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে সেই পরিবারেরই দুই মহিলার ষড়যন্ত্র। তারা পরিকল্পনামাফিক পর পর খুন করে গেছে। এরকম ঠান্ডা মাথায় পর পর নিজের পরিবারের সদস্যদেরই খুন করার নজির বিশেষ নেই। বুধবার ওই দুই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কী ঘটেছিল
গত ২০ সেপ্টেম্বর শঙ্কর কামভারে ও তাঁর স্ত্রী বিজয়া হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধারণা করা হয়, খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকে তাঁর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দ্রুত তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শুরু হয় বুকে ব্যথা, মানে হৃদপিণ্ডের সমস্যা। তাঁদের প্রথমে স্থানীয় আহেরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নাগপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৬ দিনের মাথায় মারা যান শঙ্কর। পরদিন বিজয়ার মৃত্যু হয়। পরিবারের এই শোকের মধ্যে দেখা যায়, তাঁদের ছেলেমেয়ে কোমল দাহাগাওকর, আনন্দ ও রোশন কামভারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদেরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রতিদিন একটু একটু করে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ৮ অক্টোবর মারা যান কোমল। আনন্দ মারা যান ১৫ তারিখ। পরদিন মৃত্যু হয় রোশনের।
কীভাবে হত্যা
তদন্তে জানা যায়, সংঘমিত্রা তাঁর স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির উপরে তিতিবিরক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে, রোজা সম্পত্তি নিয়ে অশান্তির জেরে রেগেছিলেন। দুইজন মিলে ফন্দি আঁটেন পরিবারের সদস্যদের খুন করার। পরিকল্পনামাফিক তাঁরা পরিবারের সদস্যদের খাবারের মধ্যে আর্সেনিক মিশিয়ে দেন। পুলিশ জানিয়েছে জেরায় দুজনেই খুনের কথা স্বীকার করেছে। দুই গৃহবধূ এতটা গভীর ষড়যন্ত্র করে খুন করতে পারে জেনে পুলিশই হতভম্ব। পুলিশ জানিয়েছে, সঙ্ঘমিত্রা প্রথমে বিষ নিয়ে অনলাইনে সার্চ করেছিল। তার পর তেলঙ্গনা থেকে আর্সেনিক কিনে আনে, যাতে ধরা না পড়ে। জল ও খাবারের সঙ্গে সে একে একে শ্বশুর, শাশুরি ও স্বামীকে বিষ খাইয়ে দেয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours